বাংলাদেশের ব্যাংক সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান।

আমরা প্রতিনিয়ত আপনাদের জন্য বেশ কিছু সাধারণ জ্ঞানের ছোট ছোট পোস্ট নিয়ে আসি। এই পোস্টে আমরা বাংলাদেশের ব্যাংক ও বিমা ব্যবস্থা সম্পর্কে বেশ কিছু সাধারণ জ্ঞান এর প্রশ্ন এবং উত্তর নিয়ে এসেছি। আপনারা যারা ভর্তি পরীক্ষা অথবা বিসিএস ও চাকরি পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান এর প্রশ্ন এবং উত্তর খুঁজছেন। তাদের জন্য আমার এই পোস্টটি  অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশের ব্যাংক ও বিমা ব্যবস্থা সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান, সম্পর্কে আমি লিস্ট আকারে নিচে খুবই সুন্দরভাবে প্রশ্ন এবং উত্তর দিয়েছি। এছাড়াও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলি আমি লিস্ট অনুযায়ী সাজিয়ে রেখেছি। আপনার খুব সহজেই আমার এই ওয়েবসাইট থেকে বাংলাদেশের ব্যাংক সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান লাভ করতে পারবেন।

বাংলাদেশের ব্যাংক ও বিমা ব্যবস্থা।

ব্যাংক হলো জনসাধারণের অর্থ গচ্ছিত রাখার এবং ঋণগ্রহীতাদের বিভিন্ন মেয়াদি ঋণ প্রদান করার প্রতিষ্ঠান। অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাংকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। উদ্দেশ্য ও কার্যাবলির ভিত্তিতে ব্যাংককে ৩ শ্রেণিতে ভাগ করা।

যায়। যথা : কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বাণিজ্যিক ব্যাংক ও বিশেষায়িত ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিচিতি : কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি দেশের সর্বোচ্চ আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এই ব্যাংক দেশের অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নাম বাংলাদেশ ব্যাংক। বাজার, মুদ্রা ব্যবস্থা ও অন্যান্য ব্যাংকসমূহ নিয়ন্ত্রণ করে। দেশের কাগজি মুদ্রা প্রচলনের একমাত্র অধিকারী হলো

বাণিজ্যিক ব্যাংক : ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রাণ হলো বাণিজ্যিক ব্যাংক। বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান কাজ জনগণের কাছ থেকে আমানত গ্রহণ করা, ঋণ প্রদান করা, বিনিময়ের মাধ্যম সৃষ্টি করা। অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ক্রেতা-বিক্রেতার দেনা-পাওনা নিষ্পত্তিতেও বাণিজ্যিক ব্যাংক সাহায্য করে। বাংলাদেশের ব্যাংক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড । রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক ৬টি। যথা: সোনালি ব্যাংক, রুপালি ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, বেসিক

বিশেষায়িত ব্যাংক : সরাসরি সরকার নিয়ন্ত্রণাধীন ও বিশেষ কাজে নিয়োজিত ব্যাংককে বিশেষায়িত ব্যাংক বলে। বাংলাদেশে বিশেষায়িত ব্যাংক ৩টি। যথা: বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ও প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক।

বাংলাদেশের ব্যাংক ও বিমা ব্যবস্থা সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান।

  • বাংলাদেশের মুদ্রার নাম – টাকা (টাকার নামকরণ করেন মুশফেকুর সালেহীন)।
  • উপমহাদেশে প্রথম মুদ্রা আইন পাশ হয় – ১৮৩৫ সালে।
  • উপমহাদেশে প্রথম কাগুজে মুদ্রা চালু করেন – লর্ড ক্যানিং (১৮৫৭ সালে)।
  • বাংলাদেশে সর্বপ্রথম বাজারে ছাড়া হয় – ১ ও ১০০ টাকার নোট (৪ মার্চ ১৯৭২)।
  • বাংলাদেশে সরকারি নোট – ১, ২ ও ৫ টাকার নোট। সরকারি নোটে অর্থ সচিবের স্বাক্ষর থাকে।
  • বাংলাদেশে প্রচলিত যেগুলো ব্যাংক নোট- ১০, ২০, ৫০, ১০০, ২০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট (ব্যাংক নোটে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের স্বাক্ষর থাকে)।
  • বাংলাদেশে প্রথম টাকা ও মুদ্রার নকশাকার – কে জি মুস্তফা ।
  • মুদ্রানীতি (Monetary Policy) হলো – বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক ৬ মাসব্যাপী গৃহীত দারিদ্র্য বিমোচন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর নীতি ।
  • বাংলাদেশের একমাত্র নোট ছাপানোর সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন অবস্থিত – গাজীপুরের শিমুলতলীতে (এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৮ সালে)।
  • টাকা ছাপানোর জন্য বিশেষ ধরনের কাগজ আমদানি করা হয় – সুইজারল্যান্ড হতে।
  • সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন থেকে প্রথম ছাপানো হয় – ১০ টাকার নোট।
  • বাংলাদেশে ১০ টাকার মূল্যমানের পলিমার নোট প্রথম বাজারে ছাড়া হয় – ২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর।
  • বাংলাদেশে চালু পলিমার নোট মুদ্রিত – অস্ট্রেলিয়ায়।
  • বাংলাদেশের ৫০০ টাকার নোট ছাপানো হয় – জার্মানি থেকে।
  • সবার জন্য শিক্ষা’ শ্লোগানটি বাংলাদেশে প্রচলিত – দুই টাকার মুদ্রায়। বাংলাদেশে নোট চালু করার ক্ষমতা আছে একমাত্র – বাংলাদেশ ব্যাংকের।
  • মুদ্রাস্ফীতি বলতে বোঝায় – অর্থের যোগান উৎপাদিত দ্রব্য সামগ্রীর তুলনায় অধিক হওয়াকে। অর্থাৎ দ্রব্যের
  • দাম বৃদ্ধি পাবার অবস্থাকে বলা হয় মুদ্রাস্ফীতি । 1
  • মুদ্রাসংকোচন – দ্রব্যের দাম কমে যাওয়ার অবস্থাকে বলা হয়।
  • সাময়িকভাবে মুদ্রাস্ফীতি বন্ধ করা যায় – মুদ্রার সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে ।
  • বাংলাদেশে কাগজের নোট চালু আছে – ১০টি মানের। যথা- ১, ২, ৫, ১০, ২০, ৫০, ১০০, ২০০, ৫০০
  • ও ১০০০ টাকার নোট ।
  • ১০০০ টাকার নোট প্রথম বাজারে আসে – ২৭ অক্টোবর ২০০৮।
  • ২০০ টাকার নোট বাজারে আসে- ১৭ মার্চ ২০২০ (জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে)
  • ১, ২ ও ৫ টাকার নোটকে বলা হয় – বিহিত মুদ্রা বা লিগ্যাল টেন্ডার ।
  • মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক – ব্যাংক রেট বাড়িয়ে দেয় ।
  • বিমা ব্যবস্থা
  • বাংলাদেশে বিমা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে পথিকৃৎ – খুদা বক্স ।
  • বাংলাদেশে চালু বিদেশি বিমা কোম্পানি – ২টি । যথা – মেটলাইফ ও লাইফ ইনসিওরেন্স কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ।
  • বর্তমানে দেশে বিমা প্রতিষ্ঠান রয়েছে – ৭৯টি। এর মধ্যে ৭৭টি বেসরকারি ও ২টি রাষ্ট্রায়ত্ত ।
  • বাংলাদেশে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা দুইটি যথাক্রমে – জীবন বিমা কর্পোরেশন ও সাধারণ বিমা কর্পোরেশন।
  • বাংলাদেশে বিমা সংস্থাগুলোকে জাতীয়করণ করা হয় – ১৯৭২ সালে।
  • বিমা কর্পোরেশন আইন পাশ হয় – ১৯৭৩ সালে।
  • বেসরকারি খাতে বিমা কোম্পানি কার্যক্রম শুরু হয় – ১৯৮৫ সালে।
  • বিমা খাত যে মন্ত্রণালয়ের অধীন – অর্থ মন্ত্রণালয়ের।
  • বাংলাদেশের বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ গঠিত হয় – ২০১১ সালে।

বাংলাদেশের ব্যাংক ও বিমা ব্যবস্থা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলি

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এর নাম কি ?

বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নাম হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক-এর পূর্ব নাম কি?

বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বের নাম হচ্ছে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান (১৯৪৮)।

বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের স্থপতি কে করেন?

বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের স্থপতি কে করেন শফিউল কাদের।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় কোথায়?

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় হচ্ছে ঢাকার মতিঝিলে অবস্থিত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রথম মহিলা ডেপুটি গভর্নর এর নাম কি?

বাংলাদেশ ব্যাংক এর প্রথম মহিলা ডেপুটি গভর্নর নাম হচ্ছেনাজনীন সুলতানা ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রথম নারী পরিচালক কে?

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রথম নারী পরিচালক হচ্ছে অধ্যাপিকা হান্নানা বেগম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের সদস্য কতজন এবং তাদের পদবী কি?

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের সদস্য ৯ জন ও এদের পদবী হচ্ছে (১ জন চেয়ারম্যান এবং ৮ জন পরিচালক)।

বাংলাদেশ ব্যাংক তার কার্যক্রম পরিচালনা করে

১৯৯১ সালের ব্যাংক আইন দ্বারা।

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রশিক্ষণ একাডেমি কোথায় অবস্থিত?

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশিক্ষণ একাডেমি ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রথম মহিলা মহাব্যবস্থাপক কে?

  – বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রথম মহিলা মহাব্যবস্থাপক নাজনীন সুলতানা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের মেয়াদকাল কত বছর?

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের মেয়াদকাল ৪ বছর।

বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা কয়টি?

বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা ১০টি (প্রধান কার্যালয় ব্যতীত)।

টাকা জাদুঘর চালু হয় কত সালে?

ঢাকা জাদুঘর চালু হয় ২০১৩ সালে  এবং এটি ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত।

বাংলাদেশে তফশিলি ব্যাংকের সংখ্যা কয়টি?

বাংলাদেশে তফশিলি ব্যাংকের সংখ্যা ৬২টি। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় সোনালী ব্যাংক, মালিকানাধীন সরকারি ব্যাংক ৬টি, বিশেষায়িত ব্যাংক ৩টি, বেসরকারি Sonali Bank ব্যাংক ৪৪টি, বিদেশি বেসরকারি ব্যাংক ৯টি।

বাংলাদেশের নন ব্যাংকিং ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন কয়টি?

বাংলাদেশের নন ব্যাংকিং ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন ৩৫টি।

বাংলাদেশে বর্তমানে ব্যাংক রেট কত %?

বাংলাদেশে বর্তমানে ব্যাংক রেট 8%।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top