কৃষক বিদ্যালয়সমূহ (Farmer Schools)

কৃষক বিদ্যালয়সমূহ (Farmer Schools)

যে বিদ্যালয়ে কৃষকরা কৃষির তথ্য ও সেবা পায় তাকে কৃষক বিদ্যালয় বলে। কৃষক বিদ্যালয়ের মাধ্যম। 

কৃষকরা বিভিন্ন তথ্য সেবা পেয়ে থাকেন। কৃষক বিদ্যালয় ৩টি যেমন সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা (আই পি এম), সমন্বিত ফসল ব্যবস্থাপনা (আই সিএম) ও সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা (আই এফ এম) বিদ্যালয় থেকে প্রশিক্ষণ ক্লাস করার মাধ্যমে কৃষকরা কৃষি বিষয়ক তথ্য ও সেবা পান। আইপিএম স্কুলে কৃষকদের উপকারী ও অপকারী পোকা চেনানো হয়। পোকা দমনের জন্য এখানে হাতজাল, ফেরোমেন ফাঁদ, ডিম নষ্ট করা ইত্যাদি পদ্ধতি শেখানো হয় । আইসিএম স্কুলে ফসল চাষ সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন করে। আইএফএম খামারে কৃষি পণ্য উৎপাদন ও খামার পরিচালনা সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন করে এ তথ্য সমৃদ্ধ জ্ঞান তারা কৃষি কাজে সরাসরি বাস্তবে প্রয়োগ করতে পারেন। এসব স্কুল পরিচালনা করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপজেলা কৃষি অফিস ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর দেশের ৩৩৫টি উপজেলায় কৃষক মাঠ স্কুল স্থাপন করেছে। এ স্কুলগুলোতে ফসলের ব্যবস্থাপনা কলা-কৌশলের উপর কৃষকদের দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য একদল কৃষক-কৃষাণীকে অনানুষ্ঠানিকভাবে হাতে কলমে মৌসুমব্যাপী মাঠভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয় । (একটি বিদ্যালয়ের মাধ্যমে ৫০ জন কৃষক-কৃষাণীকে একটি মৌসুমের পুরো সময় ধরে ২০টি অধিবেশনের মাধ্যমে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এর মধ্যে মহিলাদের জন্য ৪টি, পুরুষ ও মহিলাদের যৌথ ৫টি এবং কৃষকদের ১১টি অধিবেশন প্রতিটি অধিবেশনের সময় ৩-৪ ঘণ্টা । প্রশিক্ষকদের কাছ থেকে তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক শিক্ষা গ্রহণ করে কৃষকরা একাকী বা দলীয়ভাবে পরীক্ষা প্লট ও প্রদশর্নী স্থাপন করে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে হাতে কলমে শিক্ষা দেন। 

তাদের শিক্ষাদান পদ্ধতি হলো- পারস্পরিক অংশগ্রহণমূলক করে শেখা, দেখে শেখা, অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে শেখা ও আবিষ্কার প্রক্রিয়ায় শেখা। এতে বয়স্ক কৃষকরাও খুব ভালোভাবে শিখতে পারেন এবং নতুন কিছু আবিষ্কার বা শেখার আনন্দে প্রশিক্ষণের প্রতি আগ্রহ বাড়ে। তাই স্কুলের প্রশিক্ষণ কৃষকদের জন্য খুবই প্রায়োগিক ও বাস্তবসম্মত। সারা দেশে মোট ১১ হাজার ৪৭০টি কৃষক মাঠ স্কুল প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে। ২ হাজার ৫৯৭ জন কৃষক/কৃষাণীকে প্রশিক্ষক হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছে । এই প্রশিক্ষিত কৃষকদের মাধ্যমেই অন্যান্য কৃষকরা তথ্য ও সেবা পায় । কৃষক বিদ্যালয়ের গুরুত্ব/প্রয়োজনীয়তা :

  1. কৃষক বিদ্যালয়ে কৃষকরা কৃষির তথ্য ও সেবা পায় । 
  2. বাস্তব প্রশিক্ষণ দেয়া হয় ।
  3. উন্নত প্রযুক্তি শেখানো হয় ।
  4. কৃষকের নিজের জমিতে প্রয়োগ করে কৃষিকে উন্নত করে ।
  5.  কৃষির বিভিন্ন সমস্যার সমাধান পায়।
  6. প্রশিক্ষিত কৃষকদের মাধ্যমে অন্যান্য কৃষকরা তথ্য ও সেবা পায়।
  7. তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক হাতে কলমে শিক্ষা দেয়া হয় ।
  8. কৃষকের ও প্রশিক্ষকদের মধ্যে অভিজ্ঞতা বিনিময় হয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *